Saturday, July 26, 2008

দেশকে ভালবাসেন না এমন লোক আছে নাকি?

যৌথ পরিবারের উদাহরণ দিয়ে শুরু করি, চার ভাই চার মনের মানুষ। চার ভাই-ই একইসাথে থাকেন, আই মিন একই পরিবারের সদস্য। সবাই-ই পরিবারের জন্য কাজ করেন, যদিও সবার মধ্যে ব্যাপক মতপাথর্ক্য রয়েছে। খুব বড় বড় সমস্যায় (যেমন পরিবারের অস্তিত্ব যেখানে প্রশ্নের সম্মুখীন) যখন পড়েন সবাই-ই আবার এক হয়ে যান। পরিবারে যে সচ্ছলতা আছে এমনটি নয়, তবুও কেউ তাদের পরিবারকে অচল পরিবার বললে খুব শক্তভাবেই ডিফেন্ড করেন। তবে পরিবারের ভিতরের কেউ এই দাবী বাইরে থেকে তুললে তখনই প্যাঁচ বাঁধে। অবশ্য এমনটি কখনই ঘটে না। তবে এটা ঠিক সবাই কোন না কোনভাবে ডমিনেন্ট করতে চান। এ ব্যাপারে একটা প্রতিযোগিতা চলে, তিনিই ডমিনেন্ট করেন যার যোগ্যতা যখন বেশি থাকে।

বাংলাদেশের মানুষ আসলে যথেষ্ট রাজনীতি সচেতন। তারা যে কারণেই যে দলকে পছন্দ করে থাকুন না কেন দেশের খোঁজখবর রাখেন, একেবারেই বিশেষজ্ঞদের হাতে ছেড়ে দেন না। এদেশে নানান কিসিমের মানুষ আছেন, বেশিরভাগই সহজ সরল। প্যাঁচ-গোজ কম বোঝেন। বেশি জনসংখ্যার দেশ বলে দুর্র্ঘটনার খবর বেশি নজরে আসে। তবুও অন্য অনেক দেশের থেকে এদেশে দুর্ঘটনা কম। গুজরাটের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নাই, সুদানের মত ক্ষুধা নাই, কাশ্মীর-ফিলিস্তিনের মত জীবনব্যাপী যুদ্ধ নাই, ইউরোপ- আমেরিকার মত ভঙ্গুর পারিবারিক ব্যবস্থা নাই, আফগানিস্তান-পাকিস্থানের মত ব্যাপক জঙ্গি সমস্যা নাই, ইরাকের মত জাতিগত আক্রোশ নাই, আছে বীজ ফেললেই ফসল ফলানোর মত জমি, প্রাকৃতিক সম্পদ আর সবচেয়ে বড় যে জিনিস তা হচ্ছে এদেশের শান্তিকামী মানুষ।

আমি অবাক হয়ে যায়, যখন দেখি টিভি রিপোর্টাররা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নিয়ে রিপোর্ট করতে যান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাক্ষাতকার নেন- তবুও তাদের হাসিমুখ। রাতে ঠিকানাহীন মানুষের সাক্ষাতকার নেন তবুও তাদের কষ্টের কথা স্বতস্ফুর্তভাবে বের হয় না। ফলে রিপোর্টে করুণার ভাব আনতে আলাদা টোন এড করতে হয়।

এদেশকে কিভাবে দেখতে চান, সেটা নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরনের স্বপ্ন লালন করেন। কেউ মনে করেন সমাজতন্ত্রই আমাদেরকে ভাল চালাতে পারবে, কেউ ভাবেন ধর্মনিরপেক্ষতা, কেউ মনে করেন জাতীয়তাবাদ, আবার কেউ ইসলামের সাবর্জনীনতাকে তুলে এনে এখানে মুক্তির পথ খুঁজেন। সে কারণেই কারও কাছে আলোড়িত চরিত্র চে গুয়েভারা, কারও কাছে গান্ধীজি বা বঙ্গবন্ধু, কেউ বা মেজর জিয়া আবার এমনও অনেকে আছেন যারা রাসুলের আদর্শ দ্বারাই বেশি আলোড়িত হন। তবে আমার কাছে যে জিনিসটি স্পষ্ট তাহলো দেশকে ভালোবাসেন না এমন লোক নেই। আগে প্রায়ই বলতে শুনতাম অমুক দেশের শত্রু ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার মনে হয় না কেউ সচেতনভাবে দেশের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখেন। তবে এটা ঠিক অনেকে স্বার্থকে বড় করে দেখেন, স্বার্থকে টিকিয়ে রাখতে অসচেতনভাবে দেশের বিরুদ্ধেও ভূমিকা রেখে বসেন।

আজ আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই, স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রাখা জরুরী- উপরের পরিবারের মত। সকলেরই উচিত, নিজের আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করেন- ভাল কথা। কিন্তু দেশকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা এটা আপনাদের আদর্শের জন্যই কল্যাণকামী নয়। তবে আদর্শই যদি এমন হয় যে, মানুষে মানুষে বিভক্তি-বিদ্বেষ ঘৃণাবোধ গড়ে তোলা তাহলে এতে সফল হওয়া যেতে পারে। কিন্তু আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এরকম মানুষ অন্তত বাংলাদেশে নাই।

Thursday, July 24, 2008

যেই হাসিতে প্রাণটা জুড়ায় সেই হাসিটা চাই আমরা, সেই হাসিটা চাই

হঠাৎ করেই একটা ছবি মানবসপটে ভেসে উঠল। যে ছবিটা সহজে ভুলতে পারি না। খুব চমৎকার এক হাসির ছবি। কোন ভেজাল নেই; ঝকঝকা, তকতকা, ফকফকা এক হাসি। প্রাণটা জুড়িয়ে যাওয়ার জন্য এই হাসির কোন তুলনা নেই।

আজ থেকে সম্ভবত ৭/৮ বছর আগের কথা, যখন আমি ইন্টারে কলেজে পড়ি। বাসে করে যাচ্ছিলাম কোথাও। বাস তখনও ছাড়ে নাই। বাসে বসার পরে বাস ছাড়ার আগ পর্যন্ত সময়টা খুব বিরক্তিকরভাবে কাটে। বিরক্তির মাত্রা আরও বেড়ে যায় যখন দেখি টাইম ওভার হয়ে গেছে বাস ছাড়ার কোন লক্ষণ নেই। বসে আছি বাসে; এই চানাচি-ই-র, এই ঝালমুড়ি, এই শসা খাবেন নাকি শসা-আ-আ, এই পেপার..... নানান রকমের ফেরিওলার চিৎকারে বিরক্তির মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

এরই মধ্যে দশ বারো বছরের এক মেয়ে উঠল বাসে, হাতে বকুলের মালা। বাসের মধ্যে অনেককে ধরল মালা কেনার জন্য। আমার সামনে এসে বলল, ভাইয়া একটা মালা নিবেন? মালা দিয়ে আমি কি করব? দিবেন প্রিয়জন কাউকে.... আমার কোন প্রিয়জন নেই। কি মনে হল, হঠাৎ করে বললাম। কত দাম? দুই টাকা- জবাব এল। আমি ওর হাতে দুই টাকা তুলে দিলাম। ও একটা মালা আমার হাতে দিল। আমি বললাম, থাক দিতে হবে না ওটা রেখে দাও। মেয়েটা তখন এমন সুন্দর একটা হাসি দিল, যে হাসিটা ঔসময়ের পূর্বেও কখনও দেখি নাই; পরেও না।

বিশ্বাস করুন, একটুও বাড়িয়ে বলছি না। যদি কাছে ক্যামেরা থাকত তবে আপনাদের দেখাতে পারতাম। আমি নিশ্চিত সেই হাসির চিত্রটা তুলে ধরতে পারলে আমি বিখ্যাত হয়ে যেতাম, আর বদলে যেত আমার জীবনের চিত্রটাই। এই হাসি মনের গভীরে আমি এখনও লালন করে চলেছি। দুই টাকায় পাওয়া হাসি.......?

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স-২

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স- এই টার্মের উৎপত্তির পিছনে মেয়র এবং স্যালভিকে কৃতিত্ব দেয়া যেতে পারে। তাদের ভাষায়, “এটা সামাজিক বুদ্ধিমত্তার (Social Intelligence) একটা রুপ যা নিজের এবং অন্যের অনুভূতি এবং আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এটা দিয়ে মানুষের মধ্যে পাথর্ক্য করা সম্ভব এবং একই সাথে এই তথ্যকে কাজে লাগিয়ে অন্যের চিন্তা ও কাজকে গাইড করা সম্ভব।”

প্রফেশনাল লাইফে উন্নতির জন্য ই কিউ চারগুণ বেশি কাযর্করী আই কিউ এর চেয়ে। ৮০জন পিএইচডিধারীর উপর জরিপ চালিয়ে এই সত্যটা বোঝা গেছে। ১৯৫০-এ যখন তারা গ্র্যাজুয়েট ছাত্র ছিলেন, তখন তাদের উপর পারসনালি টেস্ট, আই কিউ টেস্ট এবং ইন্টারভিউ নেয়া হয়। ৪০ বছর পর যখন তারা ৭০ এর ঘরে পা দিয়েছেন, তখন দেখা গেছে- তাদর প্রফেশনাল লাইফের উন্নতি নির্ভর করেছে তাদের রিজিউমি (resume), স্ব স্ব ক্ষেত্রে এক্সপার্ট কর্তৃক মূল্যায়ণ এবং তারা কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন তার উপরে।

তবে আই কিউ এর যে কোন ভূমিকা নেই তা কিন্তু নয়। ভাল কমপিটিটরদের সাথে কমপিট করে প্রফেশনাল লাইফে যেতে আই কিউ এর প্রয়োজন হয়। প্রফেশনাল লাইফে প্রবেশের পর এটার ভূমিকা কমই থাকে। তখন ই কিউ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। তাইতো দেখা যায় যেখানে পিএইচডিধারী একজন শিক্ষক ক্লাসে ছাত্রদের কোন মজা দিতে পারছেন না, অথচ পিএইচডি নাই এমন একজন শিক্ষক ক্লাসে বড় প্রভাব তৈরি করে রেখেছেন। এর পিছনে ই কিউ এর প্রভাবটাই মূখ্য। তিনি সহজে ছাত্রদের ইমোশনকে বুঝতে পারেন এবং নিজের ইমোশনকে কাযর্করভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং এর ভিত্তিতে অন্যকে গাইড করতে পারেন।

যারা অপটিমিস্ট, তারা পেসিমিস্টদের থেকে কয়েকগুণ বেশি সফলতা দেখাতে পারেন। সেলসম্যানদের উপরে চালানো অপর এক গবেষনায় দেখা গেছে, অপটিমিস্টরা ৩৭ ভাগ বেশি সফল ছিলেন পেসিমিস্টদের তুলনায়।

গোলম্যান ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স এর ৫টি ডোমেইনের কথা বলেছেন ঃ
১. নিজের আবেগকে জানা
২. আবেগের সমন্বয়
৩. নিজের মোটিভেশন
৪. অন্যের আবেগকে ধরতে পারা এবং বুঝতে পারা
৫. অন্যের সাথে সম্পর্ক স্থাপন

নিচে কিছু ইমোশন তুলে ধরা হলঃ

• Simple emotions
o discovery - confusion
o gain - loss
o surprise - no surprise - expectation
o wonder - commonplace
o happiness - unhappiness
o amusement - weariness
o completion - incompleteness
o courage - timidity - cowardice
o pity - cruelty
o repentance - lack of regret - innocence

• Complex emotions
o pride - modesty - shame
o closeness - detachment - distance
o complaint/pain - doing OK - pleasure
o caution - boldness - rashness
o patience - mere tolerance - anger
o relaxation - composure - stress

• Pure emotions
o fear - nervousness - security
o togetherness - privacy
o respect - disrespect
o appreciation - envy
o love - no love lost - hatred
o familiarity - mystery

• Propositional attitudes
o attentive - inattentive - avoiding
o alertness - exhaustion
o intent - indecision - refusal
o effort - no real effort - repose
o hope - despair
o desire - indifference - reluctance
o interest - no interest - repulsion

• Complex propositional attitudes
o permission - prohibition
o competence - incompetence
o obligation - freedom
o constraint - independence - resistance to constraint
o request - negative request
o suggestion - no suggestion - warning

Wednesday, July 23, 2008

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স-১


খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, একসময় মনে করা হত যার আই কিউ যত ভাল সে মানুষ হিসাবে তত বেশি এগিয়ে। এখন বোধহয় সে ধারণা বদলেছে, এক্ষেত্রে যেটি আই কিউ এর জায়গা দখল করেছে, সেটি হল ই কিউ (Emotional Intelligence Quotient)

ডেনিয়েল গোলম্যান এই টার্মটাকে জনপ্রিয় করেছেন তার লেখা বই 'ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স' এর মাধ্যমে ১৯৯৫ সালে। বইটি প্রায় দেড় বছর আন্তর্জাতিক বেস্ট সেলার বই হিসাবে New York Times-এ স্থান পেয়েছিল।

আই কিউ, Intelligence Quotient, যা পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তির বুদ্ধমত্তাকে পরিমাপ করে থাকে। মূলত মানুষের বোধশক্তিকেই (Cognitive Ability) আই কিউ বলা হয়ে থাকে। কগনিশন হচ্ছে জ্ঞান এবং বুঝশক্তি যা চিন্তা-ভাবনা, অভিজ্ঞতা এবং সেন্স দ্বারা অর্জিত হয়ে থাকে।

বাস্তবে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে দেখা গেছে, এর বাইরেও আরও কিছু বিষয় আছে যেগুলি মানুষের উন্নতির জন্য বড় ভূমিকা রাখে। এটাকেই বলা হচ্ছে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স, যাকে অল্প কথায় বলা যেতে পারে ব্যক্তির যোগ্যতা এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়।

আর একটা কথা বলা উচিত, আই কিউকে মাপা যায় কিন্তু ই কিউকে মাপা যায় না। যদিও শেষেরটির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ লক্ষ করা যায়।

ডেনিয়েল গোলম্যান তার মডেলে চার ধরনের ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স স্কিলের কথা বলেছেন:
১. সেল্ফ অ্যাওয়ারনেস
২. সেল্ফ ম্যানেজমেন্ট
৩. সোশ্যাল অ্যাওয়ারনেস
৪. রিলেশনশীপ ম্যানেজমেন্ট

আই কিউ এর উপর ভিত্তি করে সমারভিল, ম্যাসাচুসেটস-এ ৪৫০ জন বালকের উপর এক পরীক্ষা চালানো হয়। দুই-তৃতীয়াংশকে নেয়া হয় ওয়েলফেয়ার ফ্যামিলি থেকে এবং বাকীদের নেয়া হয় যাদের আই কিউ ৯০ এর কম। ৪০ বছর পর দেখা গেছে, তাদের বাকী জীবন কত ভালভাবে কেটেছে তা তাদের আই কিউয়ের সাথে কমই সংগতিশীল ছিল।

আজ এ পর্যন্তই, আগামী পর্বে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

Monday, July 21, 2008

বাস্তব জীবন থেকে পাওয়া কতিপয় শিক্ষা (শেষ): ড. আহমাদ তুতুনজী

এই লেখাটি ইতোপূর্বে কোন এক বাংলা ব্লগ সাইটে ১৮ ই এপ্রিল, ২০০৭ তারিখে প্রকাশিত হয়।

শেষ পর্বঃ
ঃ যাদের মাঝে ব্যর্থতা মোকাবিলা করার মত সাহস আছে, তারাই কঠিন বাধা অতিক্রম করে সফল হতে পারে।

ঃ বর্তমান বিশ্বে ব্যর্থতা সবচেয়ে খারাপ বিষয় নয়, বরং কোন কিছুতে দক্ষ না হতে পারাই আসল ব্যর্থতা।

ঃ সর্বোচ্চ ভবনের মালিক হওয়ার জন্য দুটি পদ্ধতি আছে: (১) নিজের চারপাশের সকল ভবন গুঁড়িয়ে দেয়া, (২) সবচেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণ করা। এর মধ্যে সর্বদা দ্বিতীয় পন্থা অবলম্বন করাই শ্রেয়।

ঃ ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানুষ শেষ হয়ে যায় না বরং অহংকারই তাকে শেষ করে দেয়।

ঃ চূড়ান্ত সফলতা সেই লাভ করে যার সাহস ও ধৈর্য শক্তি আছে।

ঃ বীরত্ব ছাড়া এই জীবনে বড় কিছু বাস্তবায়ন করা যায় না।

ঃ একটু মুচকি হাসি দিতে কিছুই খরচ হয় না, কিন্তু অনেক কিছুই অর্জিত হয়।

ঃ আমাদের দেখা যতকিছু উদ্ভাবিত ও আবিস্কৃত হয়েছে , তা উদ্ভাবিত ও আবিস্কারের পূর্বে এই ফায়সালা দেয়া হয়েছে যে, এটা খুবই অসম্ভব।

ঃ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকালে তুমি যদি পূর্ণ প্রস্তুতিসহ আসো , তাহলে পুরস্কার না পেলেও তুমি সফল।

ঃ মানুষ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী যে অস্ত্র লাভ করতে পারে তা হলো সময় ও ধৈর্য।

ঃ যারা ব্যর্থ তারা দু’শ্রেণীতে বিভক্ত। এক শ্রেণী শুধু চিন্তা করে কিন্তু তা বাস্তবায়ন করে না, আর এক শ্রেণী চিন্তা না করেই কাজ করে।

ঃ যে কাজ করে না তার কোন ভুল হয় না, যে কাজ করে তারই ভুল হয়।

ঃ কোন কিছু প্রত্যাশা করা ছাড়া প্রদত্ত একটি সস্তা উপহারের প্রভাব, বিনিময় পাওয়ার প্রত্যাশায় প্রদত্ত মূল্যবান উপহারের প্রভাবের চেয়ে অনেক বেশি।

ঃ এমন অনেক সমস্যা আছে যা মানুষকে মেনে নিতে হয়; কিছু সমস্যা অনেক কঠিন, আর কিছু মানুষের ক্রোধের উদ্রেক করে।

ঃ সবচেয়ে ভাল আত্নতৃপ্তি হলো নিজের ভিতরে এ অনুভূতি থাকা যে, তুমি সঠিক পথে আছো, এতে যদি সারা দুনিয়া তোমার শত্রু হয়ে যায়, তাতেও কোন অসুবিধা নেই।

ঃ জীবনে সমস্যার অস্তিত্ব না থাকায় সৌভাগ্যের কারণ নয়, বরং সমস্যা জয় করতে পারলেই সৌভাগ্য নাগালে আসে।

ঃ অতীত নিঃশেষিত হয়েছে, ভবিষ্যত সুদূর পরাহত, কিন্তু বর্তমান হচ্ছে মহা সুযোগ, আমাদেরকে এ সুযোগ বিজ্ঞতা ও বিচক্ষণতার সাথে কাজে লাগাতে হবে।


(ছাত্রসংবাদ থেকে সংগৃহীত)

Sunday, July 20, 2008

বাস্তব জীবন থেকে পাওয়া কতিপয় শিক্ষা (এক): ড. আহমাদ তুতুনজী

লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয় কোন এক বাংলা ব্লগ সাইটে ১৩ এপ্রিল, ২০০৭ তারিখে


বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন আগে ড. আহমাদ তুতুনজী এসেছিলেন। গ্র্যান্ড আজাদ হোটেলে তাঁর স্মরণে আয়োজিত একটি প্রোগ্রামে তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে যে চমৎকার বক্তব্য দেন তার সার নির্যাস নিচে তুলে ধরা হলো.........

ঃ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা লেখাপড়া শিখে পরীক্ষার সম্মুখীন হই, আর বাস্তব জীবনে আমরা পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে পড়াশুনা করি।

ঃ একজন বিজ্ঞ লোকের সাথে নাতিদীর্ঘ আলোচনা বা তাঁর একটু সঙ্গ মাসব্যাপী অধ্যয়নের সমান।

ঃ উত্তম মানুষ তিনি, যিনি কচ্ছপের গতিতে সঠিক পথে চলেন, সে নয় যে হরিনের বেগে ভুল পথে ধাবিত হয়।

ঃ অগণিত শিক্ষার্থী পাওয়া যায়, কিন্তু পরিশীলিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা নগণ্য ।

ঃ নিজের চারপাশের সকলকেই খুশী করতে মনোনিবেশ করাই ব্যর্থতার দ্বার খুলে দেয়।

ঃ এ পর্যন্ত তুমি কি অতিক্রম করে এলে তার সাথে তুলনা করো না, বরং নিজের সামর্থ দ্বারা কি অর্জন করা উচিত ছিল তার সাথে হিসাব মেলাও।

ঃ সফলতাই সব কিছু নয়, সফলতা লাভের আগ্রহই সব কিছু।

ঃ সফলতা পেতে হলে মানুষকে লোক চক্ষুর অন্তরালে অবস্থানকারী, হতাশ, একদেশদর্শী, অলক্ষুণে ও হিংসুটে লোকদের থেকে দুরে থাকতে হবে কেননা আমাদের সম্পর্কে যে সব কথা তারা বলে, তা আমরা তাদের থেকে দূরে থাকলে যতটা ক্ষতি করে, তাদের থেকে দূরে না থাকলে তা আরো বেশি ক্ষতি করবে। একদেশদর্শিতা, হতাশা, অলক্ষুণে ভাব কলেরার মত মারাত্নক রোগ সবসময় এগুলো থেকে দূরে থাকবে।

ঃ ভাল কথার চেয়ে ভাল কাজ অনেকগুণে উত্তম।

ঃ আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি মহান অর্জনের সূচনা হয়েছে চিন্তা ও ক্ষুদ্র উদ্যোগ দিয়ে।

ঃ যে কোন কাজ সম্পন্ন করার সর্বোত্তম পন্থা সর্বদা বিদ্যমান, সে পন্থা লাভ করার চেষ্টা আমাদেরকে অব্যাহত রাখতে হবে।

ঃ তোমার কাজ কত দ্রুত সম্পন্ন করলে তা মানুষ ভুলে যায়, কিন্তু তোমার সফলতার মান থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে।

ঃ আপন সত্তার সাথে প্রতিযোগিতাই বিশ্বের সর্বোত্তম প্রতিযোগিতা, মানুষ যখন আপনসত্তার সাথে প্রতিযোগিতা করে তখন নিজেই উৎকর্ষিত হয় এভাবে যে, তার আজকের জীবন যেন গতকালের চেয়ে সুন্দর হয় এবং আজকের চেয়ে আগামীকালের জীবন যেন আরো সুন্দর হয়।

ঃ মানুষ কোন বিষয়ে উৎকর্ষ সাধন করতে পারে না যদি তাতে অভ্যস্ত হওয়ার পরিবর্তে দক্ষ না হয়।

ঃ যারা ব্যর্থ তারা বলে যা বাস্তবে লাভ হয় তা-ই সফলতা ।

ঃ পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া কোন প্রত্যাশাই পূরণ হয় না।

ঃ দ্রুততর যোগাযোগ, ইন্টারনেট ও কম্পিউটারের এ যুগে জ্ঞানই একমাত্র শক্তি বলে গণ্য হয় না, বরং জ্ঞানের বাস্তব প্রয়োগই শক্তি।

(চলবে, ছাত্র সংবাদ থেকে সংগৃহীত)

Friday, July 18, 2008

আপনি আমার কাছে নিরাপদ

আপনি আশ্বস্ত হতে পারেন, বিশ্বাস করতে পারেন, আস্থা রাখতে পারেন.... আপনি আমার কাছে নিরাপদ। আপনাকে দেয়ার মত আমার কমপক্ষে এতটুকু আছে। এটুকুই বা কম কি?

হতে পারে, আপনি দরিদ্র- সহায় সম্বলহীন একজন মানুষ। আমিও হয়ত আপনাকে দেয়ার মত তেমন যোগ্যতা রাখি না, কেবল একটি ছাড়া। আপনার অসহায়ত্বের আমি সুযোগ নিবো না, আপনি আমার দ্বারা আক্রান্ত হবেন না। এই সামান্য ব্যাপারটা কি আপনার কোন কাজে আসে?

হতে পারে, আপনি সম্পদশালী- অনেক বিত্ত বৈভবের মালিক। আপনার সম্পদ আমার মধ্যে কোন ঈর্ষা তৈরি করে না। আমি মানুষকে সম্পদের মাপকাঠিতে জাজ করতে শিখিনি। এই যে, সম্পদ-বিত্ত এগুলির দ্বারা আপনি আমার কাছে মুল্যবান হতে পারেননি। আপনার ভ্যালু এমন কিছু বেড়ে যায়নি যা আমার মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন আপনি আমার তরফ থেকে কোন ষড়যন্ত্রের আশংকা করছেন না।

হতে পারে, আপনি একজন মাস্তান- সকল খারাপ কাজই আপনার দ্বারা হয়ে থাকে। আপনি বিশ্বাস রাখতে পারেন, আমি আপনার ভাষায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করব না।

একজন মুসলিমের দেয়ার জায়গাটা এখান থেকেই শুরু। আপনি যেদিন থেকে মুসলিম সেদিন থেকে আপনি অন্যকে শান্তির নিরাপত্তা দিচ্ছেন। আপনি খুব ভাল করেই জানেন, মিথ্যা বেশিদিন টিকবে না, সত্য এসে সে জায়গা দখল করে নেবে। আপনি খুব ভাল করেই জানেন, একজন মানুষকে হত্যা করার অর্থই হচ্ছে সমগ্র মানবতাকে হত্যা করা...তাকে অপদস্ত করা।

আপনার কাছে নিরাপদ হবে আপনার পরিবেশ, অন্য সৃষ্টি, অন্য মত, অন্য চিন্তা। এগুলি কোন কিছুই আক্রান্ত হবে না।

তবে হ্যাঁ, আপনাকে আমার এই নিরাপত্তা দানকে সুযোগ মনে করে কোন অন্যায় করতে দেয়া হবে না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন। আমি আপনার পাশে এস দাঁড়াব, সরিয়ে দেব আপনার অবস্থান জালিমের জায়গা থেকে ভাল কিছুতে যদি আল্লাহ চান। আপনি আমাকে এক্সপ্লয়েট করতে পারবেন না, কারণ আমি এক্সপ্লয়েট হতে শিখিনি।